ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের বিভাগ পেয়েছেন হৃদয় সরকার
প্রকাশিত : ২২:৩৪, ২৮ নভেম্বর ২০১৮
‘সেরিব্রাল পালসি’তে আক্রান্ত আলোচিত হৃদয় সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)তে নিজের পছন্দের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। আজ (বুধবার) এই বিভাগে ভর্তির বিষয় নির্ধারিত হওয়ার পর এ তথ্য জানা গেছে।
হৃদয় গণমাধ্যমকে জানান, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হতে পেরে ভীষণ খুশি। কেননা তিনি এই বিভাগেই পড়তে চেয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি ।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দিন মা সীমা সরকারের কোলে করে পরীক্ষার হলে নিয়ে আসেন হৃদয় সরকারকে। শারীরিক ভাবে অক্ষম ছেলে হৃদয় সরকারকে নিয়ে মায়ের জীবন যুদ্ধের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। মাতৃত্বের এমন আকুতি দেশ- বিদেশের মানুষকে ব্যাপক নাড়া দেয়।
হৃদয় সরকারকে নিয়ে মায়ের এমন ভালোবাসা বিশ্বের ১০০ অনুপ্রেরণাদায়ী মায়ের তালিকায় আসন করে নেন হৃদয়ের মা সীমা সরকার।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি তাদের করা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বের ১০০ অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকায় ৮১তম অবস্থানে রয়েছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মা-ছেলের অবিশ্বাস্য লড়াইয়ের গল্প।
প্রসঙ্গত, ভর্তি পরীক্ষায় হৃদয় সরকার বাংলা অংশে ৯ দশমিক ৩০, ইংরেজি অংশে ১৪ দশমিক ৪০ ও সাধারণ জ্ঞান অংশে ২৭ দশমিক ৯০ নম্বরসহ মোট ১২০ দশমিক ৯৬ নম্বর পেয়ে ৩ হাজার ৭৪০ তম হন।
উল্লেখ্য, প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তির আবেদন করেছিলেন হৃদয় সরকার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী কোটার ফরম সংগ্রহ করতে গেলে তাকে জানানো হয় তিনি ওই কোটার মধ্যে পড়েন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে প্রতিবন্ধী কোটায় শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী-এই তিন ধরণের প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ কোটা প্রযোজ্য। এখানে শারীরিক বা অন্য কোন ধরণের প্রতিবন্ধীরা কোটায় ভর্তি হতে পারবেন না।
এই খবর শুনে হৃদয় এবং তার মা ভেঙে পড়েন। এ সময় আবারও আলোচনায় আসেন হৃদয় সরকার। এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী কোটার বিধিমালায় সংস্কার এনে শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরও যুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ তৈরি হয় হৃদয় সরকারের।
কেআই/এসি
আরও পড়ুন